যাত্রা শুরুর গল্প
প্রতিটি মহান কৃতিত্ব একটি স্বপ্ন দিয়ে শুরু হয়, একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা মানুষকে তাদের চিন্তাভাবনাকে একটি শক্তিশালী বাস্তবে রূপ দিতে অনুপ্রাণিত করে। প্রতিটি মহান স্বপ্ন একজন স্বপ্নদর্শী দিয়ে শুরু হয়। আইএসটি প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন অধ্যাপক আবদুস সালাম। তিনি গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন যে ‘বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা সমস্ত মানবজাতির সাধারণ ঐতিহ্য’ এবং তার স্বপ্ন ছিল যে উন্নয়নশীল বিশ্বের উপকৃত হওয়া উচিত এবং উন্নত বিশ্বের সমানভাবে সেই ঐতিহ্যে যথেষ্ট অবদান রাখতে পারে।
তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে ইসলাম যে কোনো বৈজ্ঞানিক কাজের মৌলিক অংশ। তিনি একবার লিখেছিলেন যে “পবিত্র কুরআন আমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট প্রকৃতির নিয়মের সত্যতা নিয়ে চিন্তা করার নির্দেশ দেয়; যাইহোক, আমাদের প্রজন্ম যে তাঁর নকশার একটি অংশ দেখার সুযোগ পেয়েছে তা হল একটি অনুগ্রহ এবং অনুগ্রহ যার জন্য আমি বিনীত চিত্তে ধন্যবাদ জানাই।”
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের জন্য তার গ্রহণযোগ্য বক্তৃতার সময়, সালাম কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করেন এবং বলেছিলেন:
“তুমি দেখ না, পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে কোন অপূর্ণতা, তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দাও, কোন ফাটল দেখছ? তারপর বারবার তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দাও। তোমার দৃষ্টি, তোমার কাছে ফিরে এসো মুগ্ধ, ভীতু।” (67:3-4) এটি, কার্যত, সমস্ত পদার্থবিদদের বিশ্বাস; আমরা যত গভীরে খুঁজি, ততই আমাদের বিস্ময় উত্তেজিত হয়, আমাদের দৃষ্টিতে মুগ্ধতা তত বেশি হয়।
ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের জন্য আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ কেন্দ্র (ICSTED) প্রতিষ্ঠা করে তিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছেন।
ICSTED-এর লক্ষ্য হল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং উন্নয়নের সকল বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার ফলাফল বিনিময় এবং শেয়ার করার জন্য শীর্ষস্থানীয় একাডেমিক বিজ্ঞানী, গবেষক এবং গবেষণা পণ্ডিতদের একত্রিত করা। এটি গবেষক, অনুশীলনকারী এবং শিক্ষাবিদদের কাছে আসা এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে গৃহীত বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলি এবং সমাধানগুলি সবচেয়ে সাম্প্রতিক উদ্ভাবন, প্রবণতা এবং উদ্বেগগুলি উপস্থাপন করার জন্য একটি প্রধান আন্তঃবিভাগীয় প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে।
আইএসটি তার স্বপ্নের ফলাফল। এটি বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৮টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি। এটি 1993 সালে প্রফেসর ডঃ শাহিদা রফিক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি “এ সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর এডুকেশন” নীতির সাথে শিক্ষার মান নিয়ে সর্বদা উদ্বিগ্ন। IST জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক(সম্মান) এবং ১ বছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর কোর্স এবং বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ৪ বছর মেয়াদী পলিটেকনিকের ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারীং কোর্স পরিচালনা করে আসছে।
স্থায়ী ক্যাম্পাস
নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস ভবন, ধানমন্ডিতে অবস্থিত। প্রশস্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণীকক্ষ, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি (প্রায় 10000 বই) এবং অডিটোরিয়াম সহ একটি শান্তিপূর্ণ, শান্ত এবং শান্ত পরিবেশ। ক্যাম্পাসে ডাক্তার ও চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়।
এস.এস.সি পাশের পর ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পরবে?
মানব সভ্যতার ইতিহাস যুগে যুগে ইঞ্জিনিয়ারিং এর অগ্রগতির ইতিহাস। মানুষের জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের নিত্য নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবন, জটিল গণিতের সূত্র আর নীতি গুলোকে প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াই ইঞ্জিনিয়ারিং। বর্তমান সভ্যতার নিমার্ণে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উচ্চ চাহিদা রয়েছে। তাই ক্যারিয়ার হিসাবে কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষা বেছে নেয়াটাই যুক্তিপূর্ণ। এছাড়া বর্তমান বিশ্বে চাকরির বাজার এতটাই প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি গ্রহণ করেও চাকরির নিশ্চয়তা পাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুস্কর হয়ে পড়ে। চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষে একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী তার ক্যারিয়ার শুরু করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে। একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীই পারেন আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে, বেকারত্ব দূর করতে এবং চাকরির পাশাপাশি তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অন্যান্য উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত হতে পারেন। আই.এস.টি বাংলাদেশ কারিগরী শিক্ষাবোর্ড অধিভুক্ত একটি সেরা পলিটেকনিক যার EIIN-১৩৯৭৮৯ এবং BTEB CODE- ৫০১৫৭। আমাদের প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে দক্ষ্য ডিপ্লোমা প্রকৌশলী তৈরি করে আসছে।
আই.এস.টি থেকে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থান
আই.এস.টি থেকে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীগন বর্তমানে আই.এস.টি’সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজ করছে। এছাড়াও দেশ বিদেশের সরকারি-বেসরকারি অনেক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছে। আই.এস.টি’র ছাত্র-ছাত্রীদের একটি উল্লেখ্যযোগ্য অংশ যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন, জার্মানী, মালয়েশিয়া, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যায়ন ও কর্মরত।
আই.এস.টি -এর বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমূহ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত উপদেষ্টামন্ডলী। দেশে-বিদেশে উচ্চ ডিগ্রীধারী ও ট্রেনিং প্রাপ্ত শিক্ষক কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, ক্লাশরুম ও বিষয়ভিত্তিক ল্যাব সমূহ। সবার জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সুবিধা। সার্বক্ষণিক জেনারেটরের ব্যবস্থা। উচ্চতর শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনে নিয়মিত শিক্ষার্থী কাউন্সেলিং। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পাঠদান ও পরীক্ষা গ্রহন।নিয়মিত ক্লাশের বাইরেও প্রয়োজনে রিভিশন ক্লাশ। প্রতি ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একজন গাইড শিক্ষক। সকল শিক্ষার্থীদের রেকর্ড সংরক্ষণসহ অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ।
আই.এস.টি শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম
- একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ মানবিক বিকাশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আই.এস.টি নিম্নোক্ত শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
- প্রতি সেমিস্টারে বিভিন্ন প্রকার সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানায় পরিদর্শনের ব্যবস্থা।
- প্রোগ্রামিং ক্লাব অব আই.এস.টি (পিসি আইএসটি) এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
- ইলেক্ট্রনিক্স, কমিউনিকেশন এন্ড রোবটিকস্ ক্লাব অব আইএসটি (ইসিআরসি) এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
- ডিবেটিং ক্লাব অব আইএসটি এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
- বনভোজন , শিক্ষা সফর, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা।
আই.এস.টি তে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রী যে সকল আর্থিক সুবিধাদি পাবে
- সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ অর্জনকারীর পরবর্তী সেমিষ্টারে মাসিক বেতন ১০০% ছাড়।
- সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০ এর উপরে অর্জনকারী ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীদের যথাক্রমে ৪০%, ৩৫% ও ২৫% মাসিক বেতন পরবর্তী সেমিষ্টারে ছাড়।
- মেয়েদের জন্য মাসিক বেতন ২০% ছাড়।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহোদর কোটায় বয়োজ্যেষ্ঠ জনের সেমিস্টার ফি ৫০% ছাড়।
- মেধাবৃত্তি (এসআর এবং আরএইচ ফান্ড থেকে)। গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তির ব্যবস্থা (আর্থিক সুবিধাদি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নূন্যতম ৮০% ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে)।
- মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য এবং আদীবাসি ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক বেতন ২০% ছাড়।
- ভর্তিকৃত সকল ছাত্রী এবং ৭০% ছাত্র প্রতি সেমিস্টারে ৪,০০০ টাকা করে সরকারী বৃত্তি পাবে।